রহমত নিউজ 29 September, 2024 02:36 PM
দেশজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকাও। এডিস মশার বিস্তার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে, আগামী মাসে ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ রূপ নেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গায়ে প্রচণ্ড জ্বর আর শরীর ব্যথা নিয়ে প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু রোগী। এতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮ হাজার ৫৬৫ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ১৫০ জন। এরমধ্যে গত সাত দিনেই (২২-২৮ সেপ্টেম্বর) ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, এবার নতুন কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। অনেকের প্লাটিলেট দ্রুত নেমে যাচ্ছে। দ্রুত সময়ে হাসপাতালে না আসায় পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।
রোগীদের অভিযোগ, রাজধানীর অনেক এলাকাতেই মশা নিধনের ওষুধ ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে না। স্প্রে করার কিছুক্ষণ না যেতেই শুরু হয় মশার উপদ্রপ।
মহাখালী ডিএনসিসি ডেঙ্গু বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক জানান, চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম জানান, ডেঙ্গু বিষয়ে আগে যেসব পরিকল্পনা করা ছিল, সেই অনুযায়ীই কাজ করছেন তারা। কাউন্সিলর না থাকার কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি শিগগিরই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আসছে অক্টোবরে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে ডেঙ্গুর প্রকোপ। বিশেষ করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কিছু জেলা উচ্চঝুঁকিতে আছে। বিশেষ করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে সৃষ্ট ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ চোখ রাঙাচ্ছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের দিকে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য; ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।